Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সার ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধির উপায়

সার ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধির উপায়
ড. উৎপল কুমার
ফসল বা গাছপালা জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ১৬টি খাদ্যোপাদন গ্রহণ করে থাকে। এই ১৬টি খাদ্যোপাদনের যে কোন একটির অভাবে ফসল তার কাক্সিক্ষত মাত্রায় ফলন দিতে পারে না। ১৬টি খাবারের মধ্যে ফসল মাটি থেকে গ্রহণ করে থাকে ১৩টি। এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের মাটিতে সব ক’টি খাবারের অভাব দেখা দেয়নি তবে অদূর ভবিষ্যতে দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা বাড়ছে মানুষ, কমছে আবাদি জমি। স্বল্প পরিমাণ আবাদি জমিতে অধিক জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটাতে একই জমিতে একের অধিক ফসল চাষবাস করতে হচ্ছে। এতে করে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মাটিতে ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় ৮ থেকে ৯ ধরনের খাবারের ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই ঘাটতিযুক্ত খাবার আমরা সার হিসেবে জমিতে প্রয়োগ করে থাকি। এটা সত্য যে, ফসল উৎপাদনে সার একটি অতি প্রয়োজনীয় ও ব্যয়বহুল উপকরণ। কিন্তু বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সারে ভর্তুকি দেবার কারণে এটি বাজারে এখন কম মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। যার ফলে কৃষাণ-কৃষাণীরা এই মৃল্যবান উপকরণটি যথেচ্ছা ব্যবহার করছেন। এ কারণে সারের অপচয় বেশি হচ্ছে। তাই প্রয়োগকৃত সারের ফলপ্রসূতা বাড়ানোর জন্য সকল প্রকারের প্রচেষ্টা চালানো উচিত। এজন্য (ক) সঠিক পরিমাণ সার প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ (খ) সঠিক প্রকারের সার নির্বাচন (গ) সঠিক পদ্ধতিতে সারপ্রয়োগের ব্যবস্থা (ঘ) সঠিক স্থানে সারদ্রব্য প্রয়োগ এবং (ঙ) সঠিক সময়ে সারপ্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। কৃষিজীবী ভাই ও বোনেরা এবার আসুন জানি কিভাবে সার প্রয়োগ করলে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
রবি ফসলের ক্ষেত্রে : রবি ফসলে সেচের সুবিধা না থাকলে ইউরিয়া সারের সবটুকু  জমি প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে ছিটিয়ে প্রয়োগ করে চাষ দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। রবি ফসলে সেচের সুবিধা থাকলে ইউরিয়া সার ২-৩ কিস্তিতে প্রযোগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি জমি তৈরির শেষ পর্যায়ে প্রয়োগের পর মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে, দ্বিতীয় কিস্তি দ্রুতবর্ধনশীল অবস্থায় এবং শেষ কিস্তি গাছে ফুল আসার ৫ থেকে ৭ দিন পূর্বে প্রয়োগ করতে হবে।
ধান চাষের ক্ষেত্রে : ইউরিয়া সার তিনটি কিস্তিতে সমানভাবে ভাগ করে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তির ইউরিয়া সার জমিতে চারা রোপণের ৮-১০ দিনের মধ্যে চারা স্থায়ী হয়ে গেলে জমি ভেজা অবস্থায় অথবা আগাছা দমনকালে প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় কিস্তির ইউরিয়া সার দ্রুত কুশি গজানোর সময় অর্থাৎ চারা রোপণের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় দফা আগাছা পরিষ্কারকালে ছিটিয়ে প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। তৃতীয় কিস্তির ইউরিয়া সার কাইচ থোড় আসার ৫-৭ দিন পূর্বে অর্থাৎ চারা রোপণের ৪৫-৫০ দিনের মধ্যে মাটি ভেজা অবস্থায় অথবা জমিতে স্বল্প পমিাণ পানি দাঁড়ানো অবস্থায় ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। জমি চূড়ান্ত প্রস্তুতির সময় শেষ চাষের আগে সমুদয় ফসফেট সার, অর্ধেক এমওপি সার এবং অর্ধেক জিপসাম সার একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে চাষের সংগে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। দস্তা ও ফসফেট সার একসঙ্গে প্রয়োগ করা উচিত নয়। তাই দস্তা সার প্রথম কিস্তি ইউরিয়া সার প্রয়োগের সময় ভালোভাবে মিশিয়ে সমস্ত জমিতে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। বাকি অর্ধেক এমওপি এবং অর্ধেক জিপসাম সার দ্বিতীয় কিস্তির ইউরিয়া সারের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে একত্রে প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। 
শাকসবজি চাষের ক্ষেত্রে : শাকসবজির বেলায় ইউরিয়া সার ফসলের বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ২-৩ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। স্বল্পমেয়াদি শস্যগুলো বেলায় সমুদয় ইউরিয়া সার জমি তৈরির শেষপর্যায়ে একবারেই প্রয়োগ করা যায়। অধিকাংশ মসলাজাতীয় ফসলে ইউরিয়া সার ২/৩ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ফুল আসার সময় ছাড়া জমি আর্দ্র অথবা সামান্য ভেজা অবস্থায় শেষ বিকেলের দিকে ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করে ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারলেই সবচেয়ে ভালো ফল আশা করা যায়। ধানের জমি বিশেষ করে বোরো ধানের জমিতে পূর্ণ দুই স্তর এ্যাজোলা মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে হেক্টরপ্রতি প্রায় ৩০-৪০ কেজি নাইট্রোজেন কম প্রয়োগ করতে হবে।
তামাক ও পেঁয়াজের ক্ষেত্রে : মিউরেট অব পটাশের পরিবর্তে পটাশিয়াম সালফেট ব্যবহার করা উচিত। প্রয়োজনবোধে গন্ধক ও দস্তার সার উপরিপ্রয়োগ করা যায়, বিশেষ করে যদি এসব সারের সুপারিশকৃত পূর্ণমাত্রা প্রাথমিকভাবে প্রয়োগ করা না হয়ে থাকে। সময়মতো ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা সত্ত্বেও গাছের কচিপাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করা গন্ধকের ঘাটতি নির্দেশ করে। এসব ক্ষেত্রে সুপারিশকৃত গন্ধক সারের পূর্ণমাত্রা যথাশিগগির সম্ভব উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। গাছের কচিপাতা সাদাটে হওয়া (গোড়ায় পাতা থেকে পর্যায়ক্রমে উপরের পাতায়) এবং এর সাথে পাতায় ছোট ছোট বাদামি দাগ সাধারণত দস্তার ঘাটতি নির্দেশ করে। এ সমস্ত লক্ষণ দেখা দিলে সুপারিশকৃত পূর্ণমাত্রার দস্তা সার তাৎক্ষণিকভাবে উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। 
পাট চাষের ক্ষেত্রে : বীজ বপনের ২-৩ সপ্তাহ পূর্বে যদি ভালোমতো পচে যাওয়া গোবর সার হেক্টরপ্রতি ৫ থেকে ৭.৫ টন হিসেবে মাটিতে প্রয়োগ করা হয় তবে ও-৯৮৯৭ জাতের পাট ছাড়া অন্য জাতের পাটে ইউরিয়া ব্যতীত অন্যান্য সার সাধারণত প্রয়োজন হয় না। ও-৯৮৯৭ জাতের পাটের ক্ষেত্রে হেক্টরপ্রতি ৫.০ কেজি ফসফরাস এবং ১৭.০ কেজি পটাশিয়াম সার প্রয়োগ করা দরকার। ও-৯৮৯৭ জাতের পাট  চাষের ক্ষেত্রে প্রাথমিক সার হিসেবে ব্যবহৃত ইউরিয়া সার সুপারিশকৃত মাত্রা থেকে শতকরা ৫০ ভাগ কমানো যেতে পারে। অন্যান্য জাতের বেলায় প্রাথমিক সার হিসেবে নাইট্রোজেন সার ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না এবং দ্বিতীয় কিস্তির (বপনের ৪৫ দিন পর) ইউরিয়া সারের পরিমাণ সুপারিশকৃত মাত্রা থেকে শতকরা ২৫ ভাগ কমানো যেতে পারে।
আখের সাথে আন্তঃফসল চাষের বেলায় : আন্তঃফসলের নিবিড়তার উপর ভিত্তি করে সার সুপারিশ করা হয়। সাধারণত আন্তঃফসলের সারির সংখ্যা অর্থাৎ ওই ফসলের গাছের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি ফসলের (আন্তঃফসলের) জন্য সুপারিশকৃত সারের অর্ধেক অথবা এক তৃতীয়াংশ সার প্রয়োগ করতে হবে। কোন ফসল একক ফসল (ংড়ষব পৎড়ঢ়) হিসেবে আবাদ করার সময় যে পদ্ধতিতে সারপ্রয়োগ করা হয় ওই ফসলটি আন্তঃফসল হিসেবে আবাদ করার ক্ষেত্রে একই পদ্ধতিতেই সার প্রয়োাগ করতে হবে।
ডালজাতীয় ফসলে : জীবাণুুসার ব্যবহার করা হলে ইউরিয়া সারপ্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। প্রতি হেক্টর জমিতে এক কেজি জীবাণু সারই যথেষ্ট। এক লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম ঝোলা গুড় মিশিয়ে ১৫ মিনিট সিদ্ধ করে পানি ঠা-া করতে হবে। অত:পর জীবাণুুসার এবং বীজ ঠা-া দ্রবণে ভালোভাবে মিশিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে শুকাতে হবে। তারপর বীজ মাঠে বুনতে হবে।
যে সব এলাকার মাটির অম্লীয় প্রকৃতির (সাধারণত পিএইচ ৫ এর নিচে) সেসব এলাকার মাটিতে ফসল লাগানোর ৭-১৫ দিন পূর্বে প্রতি শতাংশে ৪  কেজি ডলোচুন প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। কারণ নিরপেক্ষ মাটিতে পুষ্টি উপাদানের প্রাপ্যতা বেশি।
তাই কৃষিজীবী ভাই ও বোনেরা আসুন মাটি পরীক্ষা করে জমির উর্বরতা মান জেনে এই নিয়মগুলো মেনে জমিতে সারপ্রয়োগ করি, অধিক ফসল ঘরে তুলি এবং সারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করি।

লেখক : প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিসিএস (কৃষি), মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয়, টাঙ্গাইল, মোবাইল : ০১৭১২-৭০৩৩৭৩; ই-মেইল : ঁশংৎফর@ুধযড়ড়.পড়স


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon